রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
গাজী মহিনউদ্দিন ও মজিবুর রহমান রনিঃ
হাজীগঞ্জের সেন্দ্রায় প্রসাব ইনফেকশনের চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাতুড়ী চিকিৎসক সুজন কর্মকারের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এক মহিলা রোগী।
এ ঘটনায় সেন্দ্রা বাজারে লোকমুখে সুজন কর্মকারের চিকিৎসার নামে প্রতারণার বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।
১৯ জুলাই মঙ্গলবার রাতে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সেন্দ্রা বাজার ব্রিজের পশ্চিম পাশে অনিল ফার্মেসীতে মহিলা রোগীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনে রোগীর পরিবার।
অভিযোগকারী রোগী ওই ইউনিয়নের দিকচাইল হাজী বাড়ির হাফেজ শহীদুল ইসলামের মেয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাতুড়ে চিকিৎসক সুজন কর্মকার দীর্ঘদিন ধরে মহিলা রোগীদের বিভিন্ন রোগ নিয়ে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছে।
মহিলা রোগীরা তার কাছে গেলে সে চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করে আসছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রসাবে জ¦ালাপোড়া সমস্যা নিয়ে সেন্দ্রা বাজারের অনিল ফার্মেসীতে হাতুড়ে চিকিৎসক সুজন কর্মকারের কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। সাথে স্বামীকে নিয়ে আসলেও চেম্বারের ভিতরে প্রবেশ করতে না দিয়ে সুজন কর্মকারের চেম্বারের গোপন কক্ষে নিয়ে যায়।
সেখানে ওই রোগীর প্রসাবের স্থানে পাইপের নল প্রবেশ করিয়ে দেয়। এতে মারাক্তক আঘাত পায়। বিনিময়ে ৩শত টাকা ভিজিট হাতিয়ে নেয়। ওই মহিলা রোগী সহজ-সরল প্রকৃতির। তার স্বামী যখন জানতে পারে। সাথে সাথে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করে। এ সময় আশ-পাশের লোকজন ছুটে আসে। এক পর্যায়ে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে হাতুড়ে চিকিৎসক সুজন কর্মকার পালিয়ে যায়। এসময় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীদুল ইসলাম আসলে তার কাছে অপরাধ স্বীকার সমাধানের জন্য আকুতি-মিনতি জানায়।
একটি সূত্র মেঘনা পোস্টকে জানায়, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এ ঘটনাটিকে ধামা-চাপা দিতে একটি চক্র সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
হাতুড়ে চিকিৎসক সুজন আরএমপি সনদ অর্জন করলেও নিজের নামের পাশে অদৃশ্য ভূয়া ডিগ্রি ব্যবহার করে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তার দোকানের সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী সুজন কর্মকার নিজেকে মা ও শিশু রোগ, চর্ম ও যৌন, বাত ব্যাথা, জন্ডিস, পাইলস, অশ^গেজ, নাক, কান, গলা রোগের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বলে নিজেকে দাবী করে।
অশ্ব, পাইলস ও নাকের পিনাস রোগের চিকিৎসার নামে রোগীদের জন প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই হাতুড়ে চিকিৎসক।
মহিলাদের স্পর্শকাতর স্থানের এই রোগের চিকিৎসা সুজন নিজেই করে। এতে কোন নার্স কিংবা মহিলাদের সহযোগিতা নেয় না। তার চেম্বারের ভেতরে অশ^রোগের অপারেশন করাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। একটু সহজ-সরল প্রকৃতির মহিলারা আসলে পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে বেড কিংবা চকিতে শোয়ে রেখে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়াসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত।
আত্ম-মান সম্মানের ভয়ে ওই রোগী ক্যামেরার সামনে না আসতে চাইলেও পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডা. গোলাম মাওলা বলেন, এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। তবে অপ-চিকিৎসা থেকে সাধারণ মানুষকে সর্তক থাকতে হবে।